শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:০০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা মা বৃদ্ধা মরিয়ম বেগমকে (৬৫) ভাত খাইয়ে দেয়ার সময় থাপ্পড় মেরে মেয়ে তাসলিমার কান ফাটিয়ে দিয়েছে চিকিৎসক মিজানুর রহমান। এতেও ক্ষ্যান্ত হননি তিনি এরপর চলে তাসলিমাকে গালমন্ড। ঘটনাটি দেখে তাসলিমার মা মরিয়ম বারবার মুর্ছা যান।
গতকাল সোমবার দুপুরে মেডিকেলের সার্জারী ওয়ার্ডের বারান্দায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত চিকিৎসক মিজানুর শিশু সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মরিয়ম বেগমকে মেয়ে তাসলিমা দুপুরের ভাত খাওয়াচ্ছিল। এ সময় চিকিৎসক মিজানুর রহমানের হেটে যাবার পথ না দেয়ায় তাসলিমাকে এলোপাথারি মারধর শুরু করে।
এক পর্যায়ে তাসলিমার কানে থাপ্পর মারার কারনে তার কান ফেটে রক্ত বের হয়ে স্তব্দ হয়ে যায়। এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে ও হাউমাউ করে কান্নাকাটি করা শুরু করেন। মেয়ের এমন অবস্থা দেখে চিকিৎসাধীন তাসলিমার মা মরিয়ম বেগম আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন।
চিকিৎসাধীন মায়ের সেবা করতে মেয়ের এমন অবস্থা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না মরিয়ম। কান্নাকাটি করতে করতে বারবার মরিয়ম বেগম মুর্ছা যান। কিন্তু এতেও সামান্যতম সহানুভূতি দেখাননি চিকিৎসক মিজানুর। এরপরও তিনি তাসলিমাকে গালমন্দ করতে ব্যস্ত থাকেন। তাসলিমার ডাকচিৎকারে ওয়ার্ডে থাকা রোগী ও রোগীর স্বজনরা এগিয়ে আসলেও তারা কোন প্রতিবাদ করার সাহস পাননি।
কিন্তু চিকিৎসক মিজানুর চলে গেলে সবাই তাসলিমাকে আহত করার তীব্র নিন্দা জানাতে শুরু করেন। এ নিয়ে ওয়ার্ডে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। ভুক্তভোগী তাসলিমা বেগম জানান, গত ১৩ জুলাই কাউখালীর শংকপুর গ্রামের আঃ মালেক হাওলাদারের স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৬৫) পা ইনফেকশন নিয়ে শেবাচিম হাসপাতালে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি হন।
মা’কে দ্রুত সুস্থ করতে মেয়ে তাসলিমাও হাসপাতালে সার্বক্ষনিক তার সাথে থাকেন। ওয়ার্ডে বেড না পাওয়ায় মরিয়মের বিছানা শিশু সার্জারির সহকারী অধ্যাপকের রুমের দড়জার সামনে করা হয়। সেখানে থেকেই তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন। সেখানে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনরা চেয়ে চেয়ে চিকিৎসক মিজানুরের এমন অমানবিক কর্মকান্ড দেখেলেও চিকিৎসা নেয়ার ভয়ে কেউ কিছু বলেন নি।
কিন্তু পরে সবাই এসে মরিয়ম ও তাসলিমাকে শান্তনা দেয়ার চেষ্টা করে। এদিকে অভিযুক্ত ডা. মিজানুর রহমান থাপ্পড় মেরে কান ফাটিয়ে দেয়ার বিষয়টি তুচ্ছ ঘটনা বলে মনে করছেন। এ ব্যাপারে শেবাচিমের উপ-পরিচালক ডা. আঃ রাজ্জাক বলেন, কোন রোগীকে মারধর করে তার কান ফাটিয়ে দেয়া এটা সম্পূর্ণ অমানবিক। ভুক্তভোগী অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply